সংবাদ শিরোনাম
লোডিং...
Menu

Sunday, October 6, 2024

হিন্দু ধর্মের মহাগ্রন্থ ঋক্বেদে মুক্তিদাতা প্রভু যীশু খ্রীষ্ট !

হিন্দু ধর্মের আসল ধর্ম শাস্ত্র বেদ। বেদ চার ভাগে পাওয়া যায়  যথা:  ১) ঋকবেদ, ২) সামবেদ, ৩) যদুর্বেদ, ৪) অথর্ব বেদ। এই চারটি বেদ এর মধ্যে প্রথম তিনটি হলো ঈশ্বর ও মানুষের সম্পর্কের বিষয়ে ব্যক্ত করে । এর পর আছে উপনিষদ। যা বেদের সরল ব্যাখ্যা । হিন্দুদের আসল ধর্ম শাস্ত্র ঋক্ বেদ । তাতে লেখা আছে এক ঈশ্বরের কথা । তিনি স্রষ্টা, পিতা, সকল বংশের পিতা, তিনিই একমাত্র ঈশ্বর "ব্রহ্মা" । 

পবিত্র বাইবেলের মধ্যে ৬৬ টি বই আছে । ঋকবেদের মধ্যে ১০টি বই আছে । এর মধ্যে ৯টি বইতে সর্ব শক্তিমান ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে স্তব , গীত ও প্রার্থনা লিপিবদ্ধ আছে । ঋক্ বেদের শেষের বইতে এক ব্যক্তির কথা লেখা আছে । তিনি ঈশ্বর হতে জাত। তিনি স্বয়ং ঈশ্বর এর অংশ এবং তার নাম প্রজাপতি । 


ঋক বেদের দশম বা শেষ বইয়ের ৭অধ্যায় ৯০ পদে প্রজাপতির আত্নাহুতির বিষয়ে এইভাবে লেখা আছে "মাটিতে পোঁতা একটি কাঠের খুঁটির সঙ্গে এই ব্যক্তিকে শক্ত করে বেঁধে রাখা হয়েছে । তার হাতে পায়ে আঘাত করা হয়েছে এবং রক্ত ক্ষরণের ফলে তিনি মারা গেছেন । পরে পুনরুত্থানের দ্বারা তাকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হয়েছে " । প্রজাপতি মানে -প্রজা কথার অর্থ মানুষ পতি কথার অর্থ মুক্তিদাতা অর্থাৎ  মানব জাতির মুক্তি দাতা ঈশ্বর হতে জন্ম গ্রহন করবেন এবং তিনি এই পৃথিবীতে আসবেন । 

ঋকবেদের বর্ণিত ৯ টি বৈশিষ্ট্য হলো যীশুখ্রীষ্টের জন্ম , জীবন -যাপন, ক্রুশে মৃত্যু ও পুনরুত্থানের ঘটনার সঙ্গে হুবহু মিল আছে । 

প্রশ্ন আসবে যীশু বিদেশী - বিদেশে জন্ম গ্রহণ করেন । কিন্তু বেদে লেখা আছে যে পৃথিবীতে মানুষের মাঝে তার জন্ম হবে, তাই তিনি পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় জন্ম নিতে পারে । পবিত্র বাইবেলের মথি ৬: ৯-১৩ পদে যীশুর প্রার্থনা করতে শিখিয়েছেন । 

"হে আমাদের স্বর্গস্ত পিতা ......................" । 

বেদে- বৃহত্ অরণ্যক উপনিষদে এক হিন্দুকে এইভাবে প্রার্থনা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে :-

"অসতো মা সদরগময়ঃ

তমশো মা জ্যোতিরগময়ঃ 

মৃত মা অমৃতময়ঃ"  । 

অসতো মা সদ্গময়ঃ- এর অর্থ "অসত হাতে আমাকে সত পথে নিয়ে চলো " ।

 পবিত্র বাইবেলেরযোহন ১৪: ৬ পদে যীশু বললেন "আমি সত্য " । 

তমসো মা জ্যোতিরগময়ঃ -এর অর্থ -  "অন্ধকার হতে আমাকে আলোর দিকে নিয়ে চলো " । পবিত্র বাইবেলের যোহন ৮: ১২ পদে যীশু বললেন "আমি জগতের জ্যোতি " । 

মৃত মা অমৃতময়ঃ - এর অর্থ "মৃত্য হতে আমাকে অমরত্বের দিকে নিয়ে চলো "। পবিত্র বাইবেলের

যোহন ৮:৫১ যীশু বলেছেন "কেহ যদি আমার বাক্য পালন করে , তবে সে কখনো মৃত্যু দেখিবে না"  ।  পবিত্র বাইবেলের

মথি ২৩:২৩-২৪ অন্ধদের অন্ধ পথ প্রদর্শক বলে যীশু ফরিশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন । 

বেদ-মন্দকোপনিষদ ২:৭ পদে ঈশ্বরের মহাযাজক অগ্নিরস বলেছেন :-  ঈশ্বর মানুষকে যে আজ্ঞা দিয়েছিলেন তার মধ্যে প্রধান আজ্ঞাটি হলো , " তুমি তোমার সমস্ত অন্তকরন, মন ও তোমার সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে । পবিত্র বাইবেলের মার্ক - ১২:৩০ এখানে যিশু একজন মানুষকে তার সমগ্র সত্ব-দেহ, মন ও আত্নাকে সমর্পন করতে শিক্ষা দিয়েছেন । 

বেদ-ঈশ উপনিষদের "শান্তি পাঠ" অংশে ঈশ্বরের অন্য আর মহাযাজক যজ্ঞবল্ক শান্তির জন্য প্রার্থনা করতে পরামর্শ দিয়েছেন, তিনি লিখেছেন । 'ওম পূর্ণমদ পূর্ণমিদং পুনথি পূর্ণসূদচ্যাৎ হি পূর্ণাস্য পূর্ণমাদয়, পূর্ণমেভব শিষ্যায়ৎ হি । ওম শান্তি শান্তি শান্তি ' । এর অর্থ - স্রষ্টার কাছে অর্থাৎ যিনি আমার দেহ, মন ও আ্ত্মার স্রষ্টা, তার কাছে সম্পূর্ণ রুপে নিজেকে সমর্পন করি, সেই অতুলনীয় স্রষ্টা সর্ব শক্তিমান আমাদের শান্তি প্রদায়ী । 

পবিত্র বাইবেলের যোহন-৩:৩-পদে যীশু বলেছেন "নতুন জন্ম না হলে কেউ ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না । ভাগবত গীতা-১:১৭ পদে লেখা আছে " আস্মাকম বরিষ্টেয় থানিবোধ দ্বিজণ্থাম" । এর মানে - একজন আসল ব্রাহ্মণ দু বার জন্মায় । দু বার জন্ম না হলে কেউ ব্রাহ্মণ হতে পারে না  । 'ব্রহ্ম জ্ঞানেতি ব্রহ্ম '  । অর্থাত্ যে ঈশ্বরকে খুঁজে পেয়েছে এবং যে ঈশ্বর জ্ঞান লাভ করেছে সেই ব্রাহ্মণ । সুতরাং পুনর্জন্ম না হলে কেউ ঈশ্বরের জ্ঞান দেখতে পায় না । 

ইব্রীয় -১১:১ পদে সাধু পৌল বিশ্বাসের সংজ্ঞা দিয়েছেন " বিশ্বাস প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চিত জ্ঞান অদৃশ্য বিষয়ের প্রমান প্রাপ্তি । 

বেদ কট উপনিষদের- ৬:১২ পদ লেখা আছে " নৈব বাচঃন মানস, প্রপথম সাক্ষ্যে ন চক্ষুষ, অস্তেতি ব্রুবাথন্যায় তরা, কদম থাড়ুপাল বন্যায়তে" । এর অর্থ ঈশ্বরের অত্না অদৃশ্য , তাকে চোখে দেখা যায় না, মনে কল্পনা করা যায় না । বা মুখের বাক্য ব্যাখ্যা করা যায় না । কিন্তু যারা তাকে না দেখেও তার উপর বিশ্বাস রেখে প্রার্থনা করে, কেবল তারাই তার আত্মা প্রাপ্ত হয় । 

দ্বিতীয় খণ্ড সাম বেদ- সেখানে ঈশ্বর প্রজাপতির চারটি বৈশিষ্ট্যর বিষয় সাধ্যদের কাছে প্রকাশ করেছেন । যারা প্রজাপতির যজ্ঞে পুরোহিত হবে । এই বৈশিষ্ট্য গুলি মনে মনে ধ্যান করে তারা এইভাবে প্রার্থনা করে-

১)" ওম শ্রীদরিদ্রায় নমঃ

 ২)ওম শ্রীকনকায় শুদ্ধায় নমঃ

৩) ওম শ্রীবৃক্ষ শূলাদিতায় নমঃ

৪) ওম শ্রীপঞ্চ কায়ায় নমঃ । "

এই প্রার্থনা টির বাংলা অর্থ :- 

১) যিনি দরিদ্র পরিবারে জাত, তাকে আরাধনা করি । 

২) যিনি কুমারী গর্ভে জাত, তাকে আরাধনা করি । 

৩) যিনি কাষ্ঠের গুঁড়ির সঙ্গে বিদ্ধ , তার আরাধনা করি । 

৪) যিনি পাঁচ বার আঘাত প্রাপ্ত তার আরাধনা করি ।

পবিত্র বাইবেল অনুসারে হতদরিদ্র কাঠমিস্ত্রী জোসেফ নামক ব‍্যক্তির পরিবারে কুমারী মা মরিয়মের গর্ভে জন্ম গ্রহণকারী ব‍্যক্তি যীশু খ্রীষ্ট। তাঁর মৃত্যুর ঘটনাও ছিলো কাঠের গুঁড়ির সঙ্গে (ক্রুশ কাঠে) বিদ্ধ করে। তাঁকে ক্রুশে থাকা অবস্থায় পাঁচ বার বক্ষদেশে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছিল।

সব মিলিয়ে যীশু খ্রীষ্টই হলেন মহান প্রজাপ্রতির বাহ‍্যিক প্রতিরুপ। তিনিই হলেন মুক্তিদাতা।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: