সংবাদ শিরোনাম
লোডিং...
Menu

Saturday, June 29, 2024

বিজ্ঞান কি বাইবেলের সঙ্গে একমত?

📖📖বাইবেলের উত্তর

 হ্যাঁ, তবে বাইবেল বিজ্ঞানের কোনো বই নয়। কিন্তু, বাইবেলে বিজ্ঞান সম্বন্ধে যে-তথ্যগুলো রয়েছে, সেগুলো সঠিক। কয়েকটা উদাহরণ নিয়ে বিবেচনা করুন, যেগুলোর বিষয়ে বিজ্ঞান ও বাইবেল একমত। আর সেইসঙ্গে বাইবেলে বিজ্ঞান সম্বন্ধে যে-সঠিক তথ্যগুলো তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো বাইবেল লেখার সময়কালে অনেক লোক যা বিশ্বাস করত, তা থেকে একেবারে আলাদা।


 ◾নিখিলবিশ্বের একটা শুরু ছিল। (আদিপুস্তক ১:১) কিন্তু, প্রাচীন কালের অনেক কাল্পনিক কাহিনি অনুযায়ী, নিখিলবিশ্ব সৃষ্টি করা হয়নি, বরং এটাকে এক বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে সুসংগঠিত করা হয়েছে। বাবিলের লোকেরা বিশ্বাস করত, যে-দেবতারা নিখিলবিশ্ব সৃষ্টি করেছে, তারা দুটো মহাসাগর থেকে এসেছে। অন্যান্য কাল্পনিক কাহিনি অনুযায়ী নিখিলবিশ্ব এক বিশাল আকারের ডিম থেকে এসেছে।


 ◾নিখিলবিশ্ব দেব-দেবীদের খেয়ালখুশিমতো নয়, বরং প্রাকৃতিক নিয়মের দ্বারা চলে। (ইয়োব ৩৮:৩৩; যিরমিয় ৩৩:২৫) সারা পৃথিবীতে প্রচলিত যে-কাল্পনিক কাহিনিগুলো রয়েছে, সেগুলো এই শিক্ষা দেয় যে, দেবতাদের আকস্মিক এবং কখনো কখনো নির্দয় কাজের সামনে মানুষ অসহায়।


 ◾পৃথিবী শূন্যের উপর ঝুলে রয়েছে। (ইয়োব ২৬:৭) প্রাচীন কালের অনেক লোক মনে করত, পৃথিবী এক সমতল চাকতি আর কোনো দৈত্য এটা ধরে রয়েছে কিংবা এটা কোনো পশুর, যেমন ষাঁড় বা কচ্ছপের উপর রয়েছে।


 👉👉নদনদী এবং বিভিন্ন জলের উৎসে যে-জল রয়েছে, সেগুলো প্রথমে মহাসাগর এবং অন্যান্য উৎস থেকে বাষ্পের আকারে উপরে উঠে যায় এবং এরপর বৃষ্টি, তুষার অথবা শিলা হয়ে পৃথিবীতে পড়ে। (ইয়োব ৩৬:২৭, ২৮; উপদেশক ১:৭; যিশাইয় ৫৫:১০; আমোষ ৯:৬) প্রাচীন গ্রিসের লোকেরা মনে করত, নদীর জল মহাসাগরের একেবারে নীচে যে-জল রয়েছে, সেখান থেকে আসে। আর এই ধারণা প্রায় ৩০০ বছর পর্যন্ত ছিল।


 ◾বর্তমানে যে-পাহাড়পর্বত রয়েছে, সেগুলো একসময় মহাসাগরের নীচে ছিল। (গীতসংহিতা ১০৪:৬, ৮) কিন্তু, অনেক কাল্পনিক কাহিনি অনুযায়ী, পাহাড়পর্বত এখন যে-অবস্থায় রয়েছে, দেবতারা এগুলোকে ঠিক সেভাবেই সৃষ্টি করেছিল।


◾স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারজনক অভ্যাসগুলো সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। ইজরায়েল জাতিকে যে-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছিল, সেটার মধ্যে অনেক উপকারজনক আইন ছিল। যেমন মৃতদেহ স্পর্শ করার পর একজন ব্যক্তিকে তার শরীর ও কাপড় জল দিয়ে ধুতে হত, সংক্রামক রোগ হলে একজন ব্যক্তিকে একেবারে আলাদা থাকতে হত  মলত্যাগ করার পর তা মাটি দিয়ে চাপা দিতে হত। (লেবীয় পুস্তক ১১:২৮; ১৩:১-৫; দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:১৩) অন্যদিকে, একইসময়ে মিশরীয়দের একটা চিকিৎসাপদ্ধতি অনুযায়ী ক্ষতস্থানের উপর এমন একটা ওষুধ লাগাতে হত, যে-ওষুধের উপাদানের মধ্যে মানুষের মলও ছিল।


📖📖বাইবেলে কি বিজ্ঞান সম্বন্ধে ভুল তথ্য রয়েছে?

 না। আমরা যদি সঠিকভাবে বাইবেল পরীক্ষা করে দেখি, তা হলে আমরা দেখতে পাব, বাইবেলে বিজ্ঞান সম্বন্ধে সঠিক তথ্য রয়েছে। বাইবেলের সঠিক তথ্য সম্বন্ধে যে-ভুল ধারণাগুলো রয়েছে, এখানে সেগুলোর কয়েকটা তুলে ধরা হল:


🔲 ভুল ধারণা: বাইবেল বলে, ২৪ ঘণ্টার যে-দিন রয়েছে, সেই দিনের হিসাব অনুযায়ী ছয় দিনে নিখিলবিশ্ব সৃষ্টি করা হয়েছে।


👉👉 সঠিক তথ্য: বাইবেল জানায়, ঈশ্বর অনেক অনেক সময় আগে এই নিখিলবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। (আদিপুস্তক ১:১) এ ছাড়া, আদিপুস্তক ১ অধ্যায়ে সৃষ্টির যে-দিনগুলো সম্বন্ধে বর্ণনা করা হয়েছে, সেগুলো আক্ষরিক দিন নয়, বরং অনির্দিষ্ট সময়কাল। এমনকী আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টির পুরো সময়কালকেও “দিন” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।—আদিপুস্তক ২:৪.


🔲ভুল ধারণা: বাইবেল বলে, প্রথমে উদ্ভিদ এবং পরে সূর্য সৃষ্টি করা হয়েছে, যে-সূর্যের আলো ছাড়া উদ্ভিদ খাবার তৈরি করতে পারে না।—আদিপুস্তক ১:১১, ১৬.


👉👉 সঠিক তথ্য: বাইবেল দেখায়, উদ্ভিদ সৃষ্টি করার আগে ‘আকাশমণ্ডলের’ একটা নক্ষত্র, সূর্য সৃষ্টি করা হয়েছে। (আদিপুস্তক ১:১) সৃষ্টির প্রথম ‘দিবসে’ বা সময়কালে সূর্যের আলো এসে পৃথিবীর উপর পড়ে। সৃষ্টির তৃতীয় ‘দিবসে’ বায়ুমণ্ডল একেবারে পরিষ্কার হয়ে যায় আর এর ফলে সূর্যের আলো তীব্র হয়, যে-আলো ছাড়া উদ্ভিদ খাবার তৈরি করতে পারে না। (আদিপুস্তক ১:৩-৫, ১২, ১৩) এরপরই সূর্য পৃথিবী থেকে একেবারে স্পষ্টভাবে দেখা যায়।—আদিপুস্তক ১:১৬


🔲ভুল ধারণা: বাইবেল বলে, সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে।


 👉👉সঠিক তথ্য: উপদেশক ১:৫ পদ বলে: “সূর্য্যও উঠে, আবার সূর্য্য অস্ত যায়; এবং সত্বর স্বস্থানে যায়, সেখানে গিয়া উঠে।” কিন্তু, এই কথাগুলো কেবল পৃথিবী থেকে সূর্যের গতি যেভাবে দেখা যায়, সেটাকে বর্ণনা করে। এমনকী বর্তমানেও একজন ব্যক্তি “সূর্যোদয়” ও “সূর্যাস্ত” শব্দ ব্যবহার করে, তবে তিনি স্পষ্টভাবে জানেন যে, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে।


🔲 ভুল ধারণা: বাইবেল বলে, পৃথিবী সমতল।


 👉👉সঠিক তথ্য: বাইবেলে যখন “পৃথিবীর প্রান্ত” শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়, তখন এর অর্থ পৃথিবীর সবচেয়ে দূরবর্তী অংশ; এর অর্থ এই নয় যে, পৃথিবী সমতল অথবা এর একটা প্রান্ত রয়েছে। (প্রেরিত ১:৮) একইভাবে, ‘পৃথিবীর চার কোণ’ শব্দগুলোর অর্থ এই নয় যে, পৃথিবীর চারটে কোণ রয়েছে। আমরা যখন এই শব্দগুলো পড়ি, তখন পুরো পৃথিবীকেই বুঝে থাকি।—প্রকাশিত বাক্য ৭:১.



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: