সংবাদ শিরোনাম
লোডিং...
Menu

Saturday, June 29, 2024

সৃষ্টির উদ্দেশ্য পুনরুদ্ধারের কাজ [যিশাইয় ৪৩:৭, ২১; রোমীয় ৯:৫; কলসীয় ১:১৬ পদ)



সর্বজ্ঞ ঈশ্বর লুসিফারের পতন সৃষ্টির আগেই পূর্ব-নির্দিষ্ট করে রেখেছিলেন এবং তার পরিণাম সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল ছিলেন। যদিও তিনি জানতেন যে, লুসিফারের পতন হবে এবং আদম তার দ্বারা প্রলোভিত হবে, তবুও তিনি পতিত লুসিফারকে এদন বাগানে রেখেছিলেন, যে সাপের আকারে (আদি পুস্তক ৩:১ পদ দ্রষ্টব্য) উপস্থিত হয়েছিল এবং সৃষ্টির প্রকৃত উদ্দেশ্য লংঘন করার মত ভয়ানক পাপে আদমকে ফেলেছিল। অন্যভাবে, লুসিফারের পতন হয়েছিল এবং তারই প্রলোভনে পড়ে আদমেরও পতন হয়েছিল।



ঈশ্বর তাঁর সৃষ্ট মানুষের সীমাবদ্ধতা জানেন। মানুষ যখন বিনা পয়সায় অনন্ত জীবন লাভ করে সব রকম গৌরব, উঁচু পদমর্যাদা ও স্বাচ্ছন্দ্য পায়, তখন তারা তাদের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের প্রতি তাদের গভীর শ্রদ্ধাবোধ এবং কৃতজ্ঞতাবোধ হারিয়ে ফেলে, এমন কি সৃষ্টির প্রকৃত উদ্দেশ্যও ভুলে যায়। এখানেই আমাদের সীমাবদ্ধতা। আমরা যেমন আমাদের সৃষ্টিকর্তার দেওয়া বিনা পয়সার দান বা উপহারগুলো, অর্থাৎ বাতাস, সূর্যের আলো এবং জলের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলে যাই: একইভাবে মানুষ যখন ঈশ্বরের দেওয়া বিনা পয়সার উপহারগুলো উপভোগ করে, তখন তাদের মধ্যে উদ্ধত হবার প্রবণতা তৈরী হয় এবং তাদের সৃষ্টি করার পিছনে সৃষ্টিকর্তার যে উদ্দেশ্য ছিল তা ভুলে যায়।



ঈশ্বর মানব জাতিকে পাপ থেকে উদ্ধার বা পরিত্রাণের এবং পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সৃষ্টির উদ্দেশ্যের গুরুত্ব বুঝাতে শিক্ষা দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আদমের পাপ করার ফলশ্রুতিতে সব মানুষই পাপ করেছে (রোমীয় ৩:২৩ পদ দ্রষ্টব্য)। এভাবে সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে সরে যাওয়াতে মানুষ এক সুনির্দিষ্টভাবেই নিরাশা ও হতাশাপূর্ণ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু যখন তারা যীশুর প্রায়শ্চিত্তদানকারী বহুমূল্য রক্তের প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে পাপের ক্ষমা পায়, তখনই পুনরুদ্ধার কাজ শুরু হয় (১ পিতর ১:১৮-১৯ পদ দ্রষ্টব্য), তখন তারা ক্রমশ সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের ভালবাসা ও মহত্ত্ব বুঝতে সক্ষম হয় (১ যোহন ৪:৮, ১৬; রোমীয় ১১:৩৩ পদ দ্রষ্টব্য) এবং তাঁর সৃষ্টির উদ্দেশ্য (যিশাইয় ৪৩:৭, ২১: রোমীয় ৯:৫। কলসীয় ১:১৬ পদ দ্রষ্টব্য) বুঝতে পারে।



সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং আনন্দ যেন সকল সৃষ্টিই তাঁর সৃষ্টির উদ্দেশ্য অনুসারে চলে। তাছাড়া, সৃষ্টি যখন তাদের সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্য মেনে চলে, তখনই তাদের জীবন সত্যিকার আনন্দে ভরে ওঠে। ঈশ্বরের যে সন্তানেরা, যারা সত্যি করে বোঝে ও তাঁর সৃষ্টির উদ্দেশ্য হালকাভাবে দেখে না, তারা কখনও ঈশ্বরের রাজ্যে সৃষ্টির উদ্দেশ্য অনুসারে জীবন-যাপন করতে ব্যর্থ হয় না। তাছাড়াও, তারা পুরোপুরিভাবে তাদের (মানব জাতির) কাছে ঈশ্বরের দেওয়া বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয় (আদি পুস্তক ১:২৮ পদ দ্রষ্টব্য)।



সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে ঈশ্বর মানুষকে বিশেষ অধিকার দিয়েছেন। তিনি যখন মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তাকে তাঁর মত করেই সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন যেন মানুষ তাঁর সহভাগিতায় থাকে, তাই তিনি মানুষকে তাঁর সমস্ত সৃষ্টির উপরে কর্তৃত্ব করার জন্য তাঁরই অংশীদার হতে সুযোগ দিয়েছিলেন (আদি পুস্তক ১:২৬- ২৮ পদ দ্রষ্টব্য)। সেই অনুসারে, মানুষের উচিত ছিল অন্যান্য সৃষ্টির চেয়েও অনেক বেশী পরিপূর্ণভাবে সৃষ্টির উদ্দেশ্য অনুসারে জীবন-যাপন করা। অতঃপর, মানুষকে আরও পূর্ণতা প্রদান করতে ঈশ্বর শয়তানকে ব্যবহার করার এক বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। এই বিশেষ পরিকল্পনা আদি পুস্তক ৩:১৫ পদে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: