সংবাদ শিরোনাম
লোডিং...
Menu

Friday, July 5, 2024

কালো টাকা সর্ম্পকে বাইবেল কি বলে ?

 

ঈশ্বর সদাপ্রভু মোশিকে সিনয় পর্বতে স্বহস্তে লিখিত দু’টি প্রস্তরখন্ড দিয়েছিলেন। পুরাতন নিয়মের ৬১৩টি নিয়মের একটি সারসংক্ষেপ হচ্ছে ১০ আজ্ঞা। একটিতে (১-৪) ছিলো ঈশ্বরের জন্য আবশ্যিক করণীয় এবং অপরটিতে (৫-১০) মানুষের কর্তব্যসমূহ। ১০ আজ্ঞার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, ‘চুরি করিও না’, ‘তোমার প্রতিবাসীর গৃহে লোভ করিও না, প্রতিবাসীর স্ত্রীতে, কিংবা তাহার দাসে কি দাসীতে, কিম্বা তাহার গরুতে কি গর্দভে, প্রতিবেশীর কোন বস্তুতেই লোভ করিও না।’ চুরি ও লোভ করা থেকেই বিকল্প পথের সুচনা হয় এবং শেষান্তে ছলে-বলে কৌশলে স্বার্থ হাসিলের প্রচেষ্টা। প্রভু যীশুকে সব থেকে বড় ঘুষের মুখোমুখি হতে হয়েছিলো, আর সেই ঘুষের অফার দিয়েছিলো জগতের অধিপতি শয়তান দিয়াবল স্বয়ং। ত্রিভুবনের যীশু খ্রিষ্টকে ‘জগতের সমস্ত রাজ্য ও সেই সকলের প্রতাপ’ দেয়ার বিনিময়ে বলেছিলো, ভূমিষ্ঠ হয়ে মাত্র একবার প্রণাম করা। আরেকটিবার আর সেটি হলো গলগাথায় ক্রুশের ওপরে। মর্মভেদী ক্রুশীয় যন্ত্রণাকাতর অবস্থায়, মৃত্যুর দুয়ারে দন্ডায়মান সুযোগে দিয়াবলের দল মাদকদ্রব্য গ্রহণে জোরাজুরি করেছে, যেটি যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে কিন্তু প্রভু দৃঢ়প্রত্যয়ী হয়ে প্রত্যাখান করেছেন। চতুর শয়তান যীশুকে ফাঁদে ফেলতে ঘাম ঝরিয়েছে কিন্তু সফলকাম হতে পারেনি।
প্রশ্ন হচ্ছে ধর্মীয় অনুশাসন উপেক্ষা করে চুরি, লোভ, উৎকোচ গ্রহণের কতকগুলো দিক পবিত্র বাইবেল স্পষ্টতর করেছে। আর রাষ্ট্র নাগরিকদের প্রচ্ছন্নভাবে সমর্থন যোগাচ্ছে, নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বির্বজিত একটি জাতিতে পরিণত হতে চলেছি। এখানেই আমাদের জন্য চ‚ড়ান্ত পরীক্ষা, কষ্টিপাথরে যাচাইয়ে উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হলে নিশ্চিত ঈশ^রীয় ক্রোধে প্রজ্জ্বলিত হতে হবে। পবিত্র বাইবেলে বর্ণিত রয়েছে,
ক. উৎকোচ বুদ্ধি নষ্ট করে (উপদেশক ৭:৭);
খ. যে দুর্নীতি করে ও ঘুষ খায়, সে আর্শিবাদ পায় না (যিশাইয় ৩৩:১৫);
গ. উৎকোচ বা ঘুষ গ্রহণ করা পাপ (আমোষ ৫:১২);
ঘ. আর তুমি উৎকোচ গ্রহণ করিও না, কেননা উৎকোচ মুক্তচক্ষুদিগকে অন্ধ করে এবং ধার্মিকদের কথা সকল উল্টায় (যাত্রাপুস্তক ২৩:৮)
ঙ. তুমি অন্যায় বিচার করিবে না, কাহারও মুখাপেক্ষা করিবে না ও উৎকোচ লইবে না; কেননা উৎকোচ জ্ঞানীদের চক্ষু অন্ধ করে ধার্মিকদের বাক্য বিপরীত করে (দ্বিতীয় বিবরণ ১৬: ১৮-১৯);
চ. যে কেহ নিরাপরাধের প্রাণ হত্যা করিবার জন্য উৎকোচ গ্রহণ করে, সে শাপগ্রস্ত (দ্বিতীয় বিবরণ ২৭;২৫)।
পবিত্র বাইবেলে পাওয়া যায়, যাজক এলির পুত্রদ্বয় উৎকোচ গ্রহণ করতেন, যা ঈশ্বর সদাপ্রভু প্রচÐভাবে ঘৃণা করতেন। ঈশ্বর এলিকে বলেছিলেন, ‘আর তোমার দুই পুত্রের উপরে, হফনি ও পীনহসের উপরে যাহা ঘটিবে, তাহা তোমার জন্য চিহ্ন হইবে; তাহারা দুইজন এক দিবসে মরিবে।’ ইস্রায়েলদের প্রথম রাজা শৌলকে অভিষিক্ত করার পূর্বে শমূয়েলের দুই পুত্র যোয়েল এবং অবিয় বেরশেবাতে বিচারকার্য পরিচালনা করতেন। বাইবেলে তাদের বিষয়ে বর্ণনায় পাওয়া যায়, ‘কিন্তু তাহার পুত্রেরা তাঁহার পথে চলিত না, তাহারা ধনলোভে বিপথে গেল, উৎকোচ লইত ও বিচার বিপরীত করিত।’ ঘুষ-দুর্নীতি-উৎকোচ সম্পর্কে ঈশ্বরের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। সদাপ্রভু হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘তোমরা দীনহীন লোককে পদতলে দলিতেছ ও তাহা হইতে গমরূপ দর্শনী গ্রহণ করিতেছ; এইজন্য তোমরা ক্ষোদিত প্রস্তরের গৃহ নির্মাণ করিয়াছ বটে, কিন্তু তাহাতে বাস করিতে পাইবে না; তোমরা রম্য দ্রাক্ষাক্ষেত্র রোপণ করিয়াছ বটে কিন্তু তাহার দ্রাক্ষারস পান করিতে পাইবে না। কেননা আমি জানি, তোমাদের অধর্ম বহুবিধ, তোমাদের পাপ কঠোর; তোমরা ধার্মিককে ক্লেশ দিতেছ, উৎকোচ গ্রহণ করিতেছ, এবং নগর দ্বারে দরিদ্র লোকদের প্রতি অন্যায় করিতেছ। …আমি তোমাদের উৎসব সকল ঘৃণা করি, অগ্রাহ্য করি, আমি তোমাদের পর্বদিনের আঘ্রাণ লইব না। তোমরা আমর নিকটে হোম ও নৈবেদ্য উৎসর্গ করিলে আমি তাহা গ্রাহ্য করিব না এবং তোমাদের পুষ্ট পশুর মঙ্গলার্থক বলিদানও দৃক্পাত করিব না।’ হিতোপদেশ ঈশ্বরীয় সত্যটি প্রকাশ করেছেন-‘রাজা ন্যায় বিচার দ্বারা দেশ সুস্থির করেন কিন্তু উৎকোচ প্রিয় তাহা লোভ করে’; ‘যে রাজা সত্যভাবে দীনহীনদের বিচার করেন, তাঁহার সিংহাসন নিত্য স্থির থাকিবে’ (হিতোপদেশ ২৯:৪ ও ১৪ পদ)।
আমাদের স্বর্গীয় ঈশ্বর আমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ‘যে উৎকোচ ঘৃণা করে, সে জীবিত থাকে’ (হিতোপদেশ ১৫:২৭)।


 আমাদের সর্তক করে বলেছেন, তোমাদের ‘অধ্যক্ষ অর্থ চাহে, বিচারকর্তা উপহার গ্রহণে প্রস্তুত’। ঈশ্বর ঘুষ পছন্দ করেন না। বাক্যের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন, ‘তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সব দেব-দেবতার উপরে এবং তিনি প্রভুদের প্রভু। তিনি মহান, শক্তিশালী এবং ভক্তিপূর্ণ ভয় জাগানো ঈশ্বর। তিনি কারও পক্ষ নেন না এবং ঘুষও খান না।’ বাইবেলে বলে, ‘… কি চোর কি লোভী…কি পরধনগ্রাহী, তাহারা ঈশ^রের রাজ্যে অধিকার পাইবে না’ (১ করিন্থীয় ৬:১০)। সিদ্ধান্ত আমাদের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা আমদের যুবদের কী শিক্ষা দিতে চাই; নতুন প্রজন্ম উত্তসূরীদের কাছ থেকে কী গ্রহণ করতে সক্ষম! অবশ্য পবিত্র বাইবেল অবশ্য আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, আমরা যেন আমাদের শাসনকর্তাদের জন্য নিবেদিতভাবে প্রার্থনা করি (১ম তীম ২: ১-১২); তাহলে তিনিই রাজাদের চিত্তকে নিয়ন্ত্রণ করিবেন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: