ভূমিকা
উপবাস হল এক ধরনের আত্মশুদ্ধির অনুশীলন, যা প্রার্থনা, মনঃসংযোগ এবং ঈশ্বরের নৈকট্য লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বাইবেলে উপবাসের বহু দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়, যা দেখায় যে ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য ও আত্মশুদ্ধির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আচার। বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ঈশ্বরের মনোযোগ আকর্ষণ করতে বা অনুতাপ প্রকাশ করতে মানুষ উপবাস করেছে। তবে উপবাসের সময় ও ধরন নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক সামর্থ্য ও আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্যের ওপর। কেউ সন্ধ্যা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস পালন করে, আবার কেউ দীর্ঘ সময় ধরে উপবাস করে আত্মশুদ্ধির পথে অগ্রসর হয়। বাইবেল আমাদের শেখায় যে উপবাস কেবল খাদ্য পরিহার করা নয়, বরং এটি প্রার্থনা, অনুশাসন ও ঈশ্বরের সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপনের একটি মাধ্যম।
![]() |
যেখানে একজন ব্যক্তি উপবাস ও প্রার্থনায় নিমগ্ন। সূর্যাস্তের পটভূমি সন্ধ্যা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাসের প্রতীক হিসেবে রাখা হয়েছে, যা বাইবেল অনুসারে উপবাসের সময় নির্দেশ করে। |
বাইবেলের দৃষ্টিতে উপবাস (fasting) এক সন্ধ্যা থেকে পরের সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে পারে। বিশেষ করে লেবীয়পুস্তক ২৩:৩২-এ বলা হয়েছে:
"এটা তোমাদের বিশ্রামের দিন, এবং তোমরা তোমাদের প্রাণকে দীন করিবে; নবম দিনের সন্ধ্যা হইতে পরবর্তী সন্ধ্যা পর্যন্ত তোমরা এই বিশ্রামের দিন পালন করিবে।"
এটি ইহুদিদের প্রায়শ্চিত্ত দিবসের (Day of Atonement) জন্য বলা হয়েছিল, যা সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী সন্ধ্যা পর্যন্ত পালিত হতো।
সন্ধ্যা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত (এক দিন) – লেবীয়পুস্তক ২৩:৩২
উদাহরণ: প্রায়শ্চিত্ত দিবসের উপবাস, যা সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী সন্ধ্যা পর্যন্ত চলত।
উপসংহার
উপবাস শুধু খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকার নাম নয়, এটি আত্মশুদ্ধি, প্রার্থনা ও ঈশ্বরের নৈকট্য লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বাইবেল আমাদের বিভিন্ন ধরনের উপবাসের দৃষ্টান্ত দেয়, যা দেখায় যে উপবাসের মূল লক্ষ্য হলো আত্মিক জাগরণ ও ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি নিজেকে সমর্পণ করা। এটি আমাদের অন্তরকে নম্র করে, পাপ থেকে দূরে থাকতে সহায়তা করে এবং বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করে। তাই উপবাস পালন করার সময় শুধুমাত্র শারীরিক কষ্ট সহ্য করার দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং ঈশ্বরের সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ার উদ্দেশ্যে তা করা উচিত। উপবাসের মাধ্যমে আমাদের আত্মা যেন আরও পবিত্র হয় এবং আমরা যেন ঈশ্বরের করুণা ও আশীর্বাদ লাভ করতে পারি।
0 coment rios: