১. একে অপরের বোঝা বইতে হবে
"তোমরা একে অপরের বোঝা বইবে, এবং এইভাবে খ্রীষ্টের ব্যবস্থা পালন করো।"
(গালাতীয় ৬:২)
একজন পরিচর্যাকারী নিজেকে অন্যের কষ্টের অংশীদার ভাবেন। তিনি ক্লান্ত হলেও অন্যের দুঃখ হালকা করতে এগিয়ে যান, কারণ খ্রিস্টের আইনই ভালোবাসা ও সেবা।
২. সেবাকে ঈশ্বরের উপহার হিসাবে গ্রহণ করা
(১পত্র পিতর ৪:১০)
প্রত্যেক পরিচর্যাকারী বুঝতে পারেন, তাঁর যত্ন করার ক্ষমতা নিজস্ব শক্তি থেকে নয়, বরং ঈশ্বরের দেওয়া উপহার। এই দায়িত্ব বিশ্বস্ততার সাথে পালন করা জরুরি।
৩. ক্ষুদ্রতমের প্রতি সেবা করাই খ্রিস্টের প্রতি সেবা
"রাজা উত্তরে বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্য বলছি, তোমরা আমার ভাইদের এই ক্ষুদ্রতম একজনের জন্য যা করেছ, তা আমার জন্যই করেছ।’"
(মথি ২৫:৪০)
একজন পালক জানেন, প্রতিটি পরিচর্যার মুহূর্তে তিনি যেন নিজে খ্রিস্টের প্রতি সেবা করছেন। তাই প্রত্যেক ছোট কাজও মহৎ হয়ে ওঠে।
৪. শান্তনার ধারক হওয়া
"ধন্য আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতা, করুণা-পরিপূর্ণ পিতা এবং সমস্ত শান্তনার ঈশ্বর, যিনি আমাদের সব দুঃখ-কষ্টে সান্ত্বনা দেন, যাতে আমরা সেই শান্তনা দিয়ে অন্যদের সান্ত্বনা দিতে পারি।"
(২ করিন্থীয় ১:৩-৪)
পরিচর্যাকারীর কাজ কেবল শারীরিক সেবা নয়, বরং আত্মিক শান্তনা প্রদানও। যেভাবে ঈশ্বর আমাদের সান্ত্বনা দেন, আমরাও অন্যের হৃদয় শান্ত করতে আহ্বানপ্রাপ্ত।
৫. ঈশ্বর কখনো ত্যাগ করেন না
"কারণ ঈশ্বর অন্যায় করবেন না, তিনি ভুলবেন না তোমাদের কাজ ও প্রেম, যা তোমরা তাঁর নামে দেখিয়েছ, যেমন তোমরা তাঁর সাধুদের সেবা করেছ এবং এখনো করছ।"
(ইব্রীয় ৬:১০)
অনেক সময় পরিচর্যাকারীর কাজ অদৃশ্য থাকে, স্বীকৃতি আসে না। কিন্তু ঈশ্বর প্রতিটি ছোট কাজও মনে রাখেন এবং সঠিক সময়ে পুরস্কৃত করেন।
শেষ ভাবনা:পরিচর্যা কেবল কাজের চাপ নয়, এটি খ্রীষ্টের হৃদয় ধারণ করা। ধৈর্য, করুণা, নম্রতা এবং নিরব দায়িত্ববোধ — এই চারটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে একজন খ্রিস্টীয় পালক তাঁর জীবন গড়ে তোলেন।
যেখানে প্রত্যেক স্পর্শ, প্রত্যেক শব্দ হয়ে ওঠে ঈশ্বরের প্রতি এক নিঃশব্দ সেবা।
একজন পালকের প্রার্থনা:
"প্রভু, আমাকে সেই হৃদয় দাও, যা কখনো ক্লান্ত হয় না ভালোবাসায়;
সেই হাত দাও, যা অবিচল থাকে সেবায়;
সেই মন দাও, যা প্রতিদিন তোমার প্রশংসায় পূর্ণ থাকে।
আমেন।
একজন প্রকৃত পালক বা পরিচর্যাকারীর জীবন গড়ে ওঠে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, ধৈর্য, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং আত্মত্যাগের উপর ভিত্তি করে। তারা নিজের প্রয়োজনের চেয়ে পরিচর্যার দায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেন। ধীরে ধীরে, নীরবে, ভালোবাসা ও সহানুভূতির হাত ধরে তারা অন্যের জীবনে আলোকের স্পর্শ নিয়ে আসেন। প্রার্থনার মাধ্যমে তারা ঈশ্বরের শক্তি গ্রহণ করে ক্লান্তি কাটিয়ে এগিয়ে যান। তাদের নিরব সেবা বিশ্বকে মানবিক রাখে এবং ঈশ্বরের প্রেমের বাস্তব প্রতিফলন হয়ে ওঠে।
0 coment rios: