লেখকঃ [Saikat Evangelist] | প্রকাশকালঃ [১৪ই এপ্রিল ২০২৫]
ভূমিকাঃ বাংলা নববর্ষ, বা পহেলা বৈশাখ, বাংলাদেশে এক জাঁকজমকপূর্ণ সাংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে পালিত হয়। এটি অনেকের কাছে বাঙালিয়ানার প্রতীক, আবার কারও কাছে জাতীয় ঐক্যের দিন। তবে একজন খ্রিস্টান হিসেবে প্রশ্ন জাগে—এই উৎসবে আমাদের অংশগ্রহণ কি বাইবেলসম্মত? এই লেখায় আমরা খ্রিস্টীয় দৃষ্টিকোণ ও বাইবেলের আলোকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করব।
১. উৎসবের আত্মিক প্রেক্ষাপট ও উৎসঃ-পহেলা বৈশাখ শুধুমাত্র একটি বর্ষবরণ অনুষ্ঠান নয়। এর অন্তর্নিহিত কিছু উপাদান আছে যেগুলো লোকধর্মীয়, হিন্দুধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক মিশ্রতার চর্চার দিকে নিয়ে যায়। যেমন—
- মঙ্গল শোভাযাত্রা
- পৌরাণিক মুখোশ ও প্রতীক
- পূজার অনুষঙ্গ
- মূর্তি বা দেবদেবীর রূপ
এই উপাদানগুলো খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের মূল নীতির পরিপন্থী। বাইবেল আমাদের সতর্ক করে দিয়েছে:
“তোমরা অবিশ্বাসীদের সঙ্গে অসমযুগে জুড়ো না; কারণ ধার্মিকতার সঙ্গে অধার্মিকতার কী মিল আছে? আলো আর অন্ধকারের কী মিল?”
— ২ করিন্থীয় ৬:১৪
২. ঈশ্বরের মহিমায় উৎসবঃ-খ্রিস্টানদের জীবনের সব কিছুই ঈশ্বরের গৌরবের জন্য হওয়া উচিত। এমন কোনো উৎসব যা ঈশ্বরকেন্দ্রিক নয়, বরং অন্য আত্মিক প্রভাব বহন করে—তা খ্রিস্টীয় জীবনধারার পরিপন্থী।
“তোমরা যা কিছু করো, খাও বা পান করো, সবই যেন ঈশ্বরের গৌরবের জন্য কর।”
— ১ করিন্থীয় ১০:৩১
যদি বৈশাখী উৎসবে এমন কিছু থাকে যা ঈশ্বরের মহিমা বৃদ্ধি করে না, বরং সাংস্কৃতিক আনন্দের আড়ালে আত্মিক বিভ্রান্তি তৈরি করে, তাহলে খ্রিস্টান হিসেবে আমাদের অবস্থান চিন্তা করা জরুরি।
৩. মূর্তিপূজা ও আত্মিক বিভাজন
বাইবেল স্পষ্টভাবে মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে:
“তুমি নিজের জন্য কোনো মূর্তি করিও না...তুমি তাদের উপাসনা করিও না।”
— দ্বিতীয় বিবরণ২০:৪-৫
পহেলা বৈশাখে অনেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র দোহাই দিলেও কার্যত অনেক অনুষঙ্গ থাকে যা বাইবেলীয়ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। একটি মুখোশ বা শোভাযাত্রার প্রতীকই যদি পৌরাণিক দেবতার রূপ ধারণ করে, তাহলে তা কি খ্রিস্টীয় পবিত্রতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ?
৪. পৃথক জাতি হিসেবে ডাক
খ্রিস্টানরা "বিশেষ জাতি" যারা যীশুর আলোয় ডাকা হয়েছে। আমাদের ডাক হলো পৃথক জীবনযাপনের।
“তবে তোমরা পবিত্র হও, কারণ আমি পবিত্র।”
— ১ পিতর ১:১৬
পহেলা বৈশাখের উদযাপনে অংশগ্রহণ করা মানে অনেক সময়ই এই পবিত্রতা ও পৃথকীকরণকে বিলীন করে দেওয়া। একে সাধারণ সংস্কৃতি হিসেবে দেখা গেলেও, এর অন্তর্নিহিত প্রভাব আত্মিকভাবে বিপজ্জনক হতে পারে।
উপসংহারঃ পহেলা বৈশাখ একদিকে জাতীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব, তবে এর উপাদান ও আচার-আচরণ খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের মূলনীতির সঙ্গে মিল খায় না। বাইবেলের আলোকে দেখা যায়—একজন খ্রিস্টানকে এমন সব কিছু থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে যা ঈশ্বরের পবিত্রতা ও গৌরবের বাইরে।
অতএব, একজন খ্রিস্টানের উচিত পহেলা বৈশাখের মতো উৎসব এড়িয়ে যাওয়া, এবং যীশু খ্রিস্টকেই নিজের জীবনের নববর্ষ, নবজন্ম ও উৎসবের কেন্দ্র হিসেবে গ্রহণ করা।আপনার মতামত কী?
আপনি কি মনে করেন খ্রিস্টানরা এই উৎসবে অংশ নিতে পারে নিরপেক্ষভাবে? না কি এটি আত্মিক বিভ্রান্তির উৎস? নিচে মন্তব্য করে জানাতে পারেন।
0 coment rios: