ঈশ্বরের দৃষ্টিতে মানুষ: ধর্মীয় কর্মকার নাকি সম্পর্কিত সন্তান?বাইবেল জুড়ে দেখা যায়, ঈশ্বর মানুষকে শুধুই নিয়ম মানা প্রজাদের মতো দেখেননি। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন নিজের ছায়া-প্রতিমা হিসেবে, যাতে তারা তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারে (আদিপুস্তক ১:২৬)। তিনি কখনও বলেননি, “তোমরা আমার ধর্ম পালন করো”; বরং বলেন,
“আমি তাদের ঈশ্বর হব, তারা আমার জাতি হবে” (যিরমিয় ৩১:৩৩)
এটি একটি আত্মিক বন্ধন — যেখানে ভয় নয়, প্রেম কাজ করে।
যীশু কী এনেছিলেন — ধর্ম না সম্পর্ক?
যীশু খ্রিস্ট যখন দুনিয়ায় আসেন, তখন ইহুদি সমাজে শত শত ধর্মীয় নিয়ম ছিল। অথচ তিনি সেই নিয়মের পাহাড় ডিঙিয়ে মানুষের হৃদয়ে প্রবেশ করতে চাইলেন। তিনি ফারিসিদের বলেছিলেন:
“এই প্রজন্মের লোকেরা শুধু মুখে আমাকে সম্মান করে, কিন্তু তাদের হৃদয় আমার থেকে অনেক দূরে।” (মথি ১৫:৮)
যীশু কারো ‘ধর্ম’ যাচাই করেননি — তিনি তার হৃদয় দেখেছেন।
তিনি এমন কিছু বলেছিলেন, যা ধর্মীয় কাঠামোকে ভেঙে দিয়ে নতুন একটা পথে ডেকে এনেছে:
“আর আমি তোমাদের দাস বলি না... বন্ধু বলি।” (যোহন ১৫:১৫)
বন্ধু? ঈশ্বরের সঙ্গে বন্ধুত্ব? এটা কোনো ধর্ম শেখায় না, কিন্তু বাইবেল শেখায়।
ধর্ম পালন বনাম জীবন্ত সম্পর্ক: কী পার্থক্য?
বিষয় | ধর্ম | সম্পর্ক |
---|---|---|
প্রেরণা | কর্তব্য | প্রেম |
মনোভাব | “করতেই হবে” | “আমি চাই করি” |
ঈশ্বরের ভাবমূর্তি | কঠোর বিচারক | প্রেমময় পিতা |
যখন পাপ করি | লুকাতে চাই | ফিরতে চাই |
বাহ্যিক আচরণ | মুখস্থ প্রার্থনা | অন্তরের কথাবার্তা |
পবিত্র শাস্ত্র যা বলে, তা হলো সম্পর্কই মুখ্য
-
রোমীয় ৮:১৫
“তোমরা দাসত্বের আত্মা পাওনি... বরং পুত্রত্বের আত্মা পেয়েছো, যেহেতু আমরা 'আব্বা, পিতা' বলি।” -
প্রকাশিত বাক্য ৩:২০
“দেখ, আমি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছি... কেউ যদি খুলে দেয়, আমি তার সঙ্গে আহার করব।” -
১ শমূয়েল ১৬:৭
“মানুষ চেহারা দেখে, কিন্তু প্রভু হৃদয় দেখেন।”
এসব পদতেই প্রমাণিত হয় — বাইবেল নিয়ম নয়, হৃদয়ের সম্পর্ক চায়।
আজকের ডাক: নিয়ম না, অন্তর দাও প্রভু যীশু আজও প্রতিটি হৃদয়ের দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি তোমার পূজো চান না, তোমার প্রোগ্রাম চান না — তোমার হৃদয় চান।
তুমি কি শুধু বাইবেল পড়ে যাচ্ছো নিয়ম করে? না কি তুমি সেই জীবন্ত ঈশ্বরের সঙ্গে প্রতিদিন হাঁটছো, কথা বলছো, সময় কাটাচ্ছো?
ধর্ম মানুষকে ব্যস্ত করে তোলে।
সম্পর্ক মানুষকে বদলে দেয়।
শেষ কথায় বলি:বাইবেল কখনো ধর্ম তৈরি করতে আসেনি। এটি একটি সম্পর্কের কাহিনি — একটি প্রেমপত্র, যেখানে সৃষ্টিকর্তা নিজেই বলছেন,
“আমি তোমাকে চিরন্তন প্রেমে প্রেম করেছি।” (যিরমিয় ৩১:৩)
তাহলে ধর্ম কি একেবারে অপ্রয়োজনীয়?
না, ধর্ম বা নিয়মের একটি কাঠামো থাকতেই পারে—কিন্তু তা যেন সম্পর্কের ফল হয়, উৎস না হয়। ঠিক যেমন একটি প্রেমের সম্পর্কে নিয়ম তৈরি হয় বিশ্বাস ও সম্মান থেকে, তেমনি ঈশ্বরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলে কিছু অভ্যাস গড়ে ওঠে—বাইবেল পাঠ, প্রার্থনা, উপাসনা—যা আমরা করি প্রেম থেকে, দায়িত্ববোধ থেকে নয়।
এই সম্পর্কের পথ খোলা আছে আজও। যীশু ডেকে বলছেন, “এসো, আমার সঙ্গে থেকো।” এই ডাক নিয়মে নয়, প্রেমে—আপনি কি সাড়া দেবেন?
0 coment rios: