ঈশ্বর সর্বশক্তিমান—সকল জাতির বিচারক

ভূমিকা: ঈশ্বর সর্বশক্তিমান—সকল জাতির বিচারক

বিশ্বের ইতিহাসে কখনও এমন একটি সময় ছিল না যখন মানবতা এতটা বিভক্ত ছিল—জাতি, গোত্র, ভাষা, ও সংস্কৃতির পার্থক্যে। তবে, এক ঐশ্বরিক সত্য চিরকাল অটুট থাকে: ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, এবং তিনি সকল জাতির বিচারক। তাঁর সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধীনে পৃথিবী ও তার সমস্ত বাসিন্দা চলে। ঈশ্বরের কাছে সব জাতির ভাগ্য নির্ধারিত, এবং এই পৃথিবীতে তাঁর ন্যায়বিচার ও সত্য প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এই পরিকল্পনা শুধু ইস্রায়েল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং পৃথিবীর সমস্ত জাতির জন্য উন্মুক্ত।

প্রকাশিত বাক্য ৭:৯-এ বর্ণিত হয়েছে, "সব জাতি, গোত্র ও ভাষার মানুষ ঈশ্বরের সামনে দাঁড়াবে," যা স্পষ্টভাবে দেখায় যে, যিশু খ্রিস্টের মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতি ঈশ্বরের কাছে আসতে পারে। আজকের বিশ্বে, যেখানে ন্যায়বিচার ও সত্যের জন্য সংগ্রাম চলছে, সেখানে আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে—ঈশ্বরের ন্যায়বিচারের পথে চলতে এবং সেই সত্য প্রচার করতে, যা সমস্ত জাতি এবং মানবতার মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয়।

এই ব্লগে, আমরা ঈশ্বরের সার্বভৌম কর্তৃত্ব, তাঁর ন্যায়বিচারের পরিকল্পনা এবং যিশুর মাধ্যমে জাতির পরিত্রাণের পথ সম্পর্কে আলোচনা করব।

ঈশ্বর সর্বশক্তিমান—সকল জাতির বিচারক: যিশুর মাধ্যমে পরিত্রাণের পথ

আজকের বিশ্বে নানা জাতি, ভাষা, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের মধ্যে সম্পর্কিত বিচিত্রতার মাঝে এক অটুট সত্য নিহিত রয়েছে—ঈশ্বর সর্বশক্তিমান এবং সকল জাতির বিচারক। শুধু ইস্রায়েল নয়, বরং পৃথিবীর প্রতিটি জাতি এবং প্রতিটি মানুষের ভাগ্য ঈশ্বরের হাতেই নির্ধারিত। আজকের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে ন্যায়বিচার এবং সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঈশ্বর কার্যকরী ভূমিকা পালন করছেন, সেখানে আমরা তাঁর পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্যকে আরও গভীরভাবে বুঝতে পারি।

ঈশ্বরের সার্বভৌম কর্তৃত্ব

ঈশ্বরের সর্বশক্তিমানের ধারণা আমাদের মনে একটি স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি তৈরি করে, যা বলছে—ঈশ্বর শুধু ইস্রায়েলের ঈশ্বর নন, বরং তিনি সকল জাতির ঈশ্বর। তাঁর সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধীনে, পৃথিবী ও এর বাসিন্দাদের সবকিছুই তাঁর ইচ্ছামতো পরিচালিত হয়। দানিয়েল ৪:৩৫-এ বলা হয়েছে,
"পৃথিবীর সব বাসিন্দা কিছুই নয় তাঁর তুলনায়। তিনি স্বর্গের বাহিনী ও পৃথিবীর মানুষের মধ্যে তাঁর ইচ্ছামতো কাজ করেন; কেউ তাঁকে বাধা দিতে পারে না বা বলতে পারে না, ‘তুমি কেন এটা করছ?’"
এটি স্পষ্টভাবে প্রতিপাদন করে যে ঈশ্বরের ইচ্ছাই চূড়ান্ত। পৃথিবীতে সবকিছু তার মহিমার উদ্দেশ্যে ঘটে এবং তাঁর বিচার সবার জন্য ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে।

সব জাতির জন্য পরিত্রাণের পথ: যিশুর মাধ্যমে

যিশু খ্রিস্টের আগমন আমাদের জন্য একটি অবিশ্বাস্য উপহার—এটি শুধুমাত্র ইস্রায়েল বা কোনো নির্দিষ্ট জাতির জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্য। প্রকাশিত বাক্য ৭:৯-এ আমরা দেখতে পাই যে,
"সব জাতি, গোত্র ও ভাষার মানুষ ঈশ্বরের সামনে দাঁড়াবে।"
এটি পরিস্কার করে জানায়, যিশুর মাধ্যমে সব জাতির মানুষ ঈশ্বরের সামনে এসে তাঁর মহিমা প্রকাশ করতে সক্ষম হবে। এটি প্রমাণ করে যে যিশু খ্রিস্টের পরিত্রাণ একমাত্র ইস্রায়েল নয়, পৃথিবীর সমস্ত জাতির জন্য খোলা রয়েছে।

ন্যায়বিচার ও সত্যের জন্য ঈশ্বর কাজ করছেন

আজকের পৃথিবী এমন এক সময় পার করছে, যেখানে ন্যায়বিচার এবং সত্যের জন্য হাহাকার চলছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে অনৈতিকতা, অবিচার ও নিপীড়ন বেড়ে চলেছে, কিন্তু ঈশ্বর আজও তাঁর ন্যায় প্রতিষ্ঠা করছেন। ঈশ্বরের ন্যায়বিচার কখনও ম্লান হয় না, বরং সে শক্তি সমগ্র পৃথিবীকে সুশৃঙ্খল এবং সত্যের পথে পরিচালিত করার জন্য কাজ করছে। আমাদের উচিত, তাঁর ন্যায়বিচারকে অনুসরণ করে, সমাজে সত্য এবং ন্যায়ের পথে চলা। মীকা ৬:৮-এ বলা হয়েছে,
"হে মানুষ, তিনি তোমাকে যা ভালো তা বলেছেন। আর তা হলো, ন্যায়বিচার করা, দয়ার সাথে চলা ও বিনয়ের সাথে তোমার ঈশ্বরের সঙ্গে চলা।"
এই আয়াতটি আমাদেরকে ইঙ্গিত দেয় যে আমরা যদি ঈশ্বরের ন্যায় প্রতিষ্ঠার অংশ হতে চাই, তবে আমাদের কাজ হতে হবে সৎ, দয়া ও বিনয়পূর্ণ।

আজকের বিশ্বে আমাদের দায়িত্ব

আমরা যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, আমাদের দায়িত্ব হলো ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে সত্যের পথ অনুসরণ করা। সমাজে যখন injustice এবং অসত্যের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই চলে, তখন আমাদেরও ঈশ্বরের পথে চলতে হবে—সত্য, ন্যায়ের, দয়া এবং প্রেমের পথে। আমরা যদি সকল জাতির প্রতি ঈশ্বরের অশেষ ভালোবাসা ও করুণা বোঝাতে পারি, তাহলে আমরা তাঁর পরিকল্পনায় অংশ নিতে পারব।

উপসংহার

ঈশ্বর সকল জাতির বিচারক, এবং তাঁর কাছে সকল জাতির ভাগ্য নির্ধারিত। যিশুর মাধ্যমে সমস্ত জাতি ঈশ্বরের কাছে আসতে পারে এবং তাঁর পরিত্রাণ লাভ করতে পারে। ঈশ্বর আজও ন্যায়বিচার ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন, এবং আমাদের দায়িত্ব হলো তাঁর এই মহান উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ করা। আমাদের কর্ম হতে হবে সৎ, দয়ালু এবং ঈশ্বরের ন্যায়বিচারের পক্ষে, যাতে পৃথিবী তাঁর মহিমায় পূর্ণ হয়।

প্রকাশিত বাক্য ৭:৯-এর এই বার্তাটি যেন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, "সব জাতি, গোত্র ও ভাষার মানুষ ঈশ্বরের সামনে দাঁড়াবে।"

শেয়ার করুন