খ্রিষ্টীয় বিশ্বাস শুরু থেকেই শিক্ষার বিশুদ্ধতা ও সত্যতা রক্ষার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। যিশুর প্রেরিতরা এবং প্রাচীন মণ্ডলীর নেতারা সতর্ক ছিলেন যেন ভ্রান্ত মতবাদ ও বিভেদ সৃষ্টিকারী শিক্ষকেরা মণ্ডলীতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে। এই বিষয়ের উপর বাইবেল সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছে।
ভ্রান্ত মতবাদের বিরুদ্ধে কড়াকড়ি
পুরাতন নিয়মেই আমরা দেখি যে ঈশ্বর অন্য দেবতার অনুসরণ বা মিথ্যা নবীর প্ররোচনাকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
“তুমি যদি শুনিতে পাও যে, তোমার মধ্যে কেহ উঠিয়া এমন কথা বলিতেছে যাহাতে তোমরা অন্য ঈশ্বরের অনুসরণ কর...” (দ্বিতীয় বিবরণী ১৩ অধ্যায়)
নতুন নিয়মে আমরা দেখি, প্রেরিতেরা স্পষ্টভাবে বলেন:
“একজন বিভেদ সৃষ্টিকারী লোককে এক-দুই বার সতর্ক করার পর তার থেকে দূরে থাকো।” (তীত ৩:১০)
“যদি কেহ তোমাদের মধ্যে এসে এই শিক্ষা না আনে, তবে তাকে গৃহে গ্রহণ করো না, এমনকি তাকে ‘স্বাগতম’ বলো না।” (২ যোহন ১০)
প্রাচীন খ্রিষ্টীয় মণ্ডলীতে ভ্রান্ত শিক্ষকেরা
প্রথম শতকের খ্রিষ্টীয় মণ্ডলীতে কিছু লোক এমন শিক্ষা প্রচার করছিল যা প্রেরিতদের শিক্ষা থেকে বিচ্যুত ছিল। তারা প্রেরিতদের নামে কথা বলত, অথচ সত্য প্রচার করত না।
“কিছু লোক আমাদের অনুমতি ছাড়া তোমাদের মধ্যে গিয়ে তোমাদের কথা বিঘ্নিত করেছে।” (প্রেরিত ১৫:২৪)
“তারা অন্য যীশুকে প্রচার করে, ভিন্ন আত্মাকে গ্রহণ করাও হয়, এমনকি অন্য সুসমাচারও।” (২ করিন্থীয় ১১:৪)
পিতর ও যিহূদা কড়াভাবে এদের সম্পর্কে সতর্ক করেন:
“মিথ্যা নবীরা তোমাদের মধ্যেও থাকবে, যারা ধ্বংসাত্মক মতবাদ গোপনে প্রবেশ করাবে।” (২ পিতর ২:১)
“তারা ঈশ্বরের অনুগ্রহকে অবাধ্যতার অজুহাত বানিয়ে দেয়।” (যিহূদা ৪)
সত্য প্রচারকারীদের উপর দোষারোপ
যারা খ্রিষ্টের সত্য প্রচার করছিলেন, যেমন প্রেরিত পৌল ও সীল, তাদেরও লোকেরা ভুলভাবে অভিযুক্ত করেছিল।
“এই লোকেরা আমাদের নগরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে… তারা এমন নিয়ম প্রচার করে যা রোমীয়দের মানা উচিত নয়।” (প্রেরিত ১৬:২০-২১)
তবে পৌল নিজেকে স্পষ্টভাবে নির্দোষ প্রমাণ করেন এবং বলেন:
“তারা আমাকে কোনো অপরাধে দোষী প্রমাণ করতে পারবে না… আমি যা বিশ্বাস করি, তা আইন ও নবীদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।” (প্রেরিত ২৪:১৩-১৬)
0 coment rios: